ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণয়
ভূমিকম্পের স্থায়িত্ব মাত্র কয়েক সেকেন্ড হয়ে থাকে। এই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই হয়ে যেতে পারে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ। সাধারণত ভূমিকম্পের কেন্দ্র ভূপৃষ্ঠ থেকে অভ্যন্তরে 30 কিলোমিটার এর মধ্যে অবস্থিত। তবে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ভূপৃষ্ঠের 7০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে তাকে অগভীর, 7০ থেকে 3০০ কিলোমিটার এর মধ্যে হলে মধ্যবর্তী এবং 300 কিলোমিটারের নিচে হলে তাকে গভীর ভূমিকম্প হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণয় করা হয় রিখটার স্কেলের মাধ্যমে। এই স্কেলের মাত্রা 0 থেকে 10 ধরা হয়। 0 থেকে 2 মাত্রার ভূমিকম্পকে মৃদু ভূমিকম্প, 2 থেকে 4 মাত্রার ভূমিকম্পকে মাঝারি ভূমিকম্প, 4 থেকে 7 মাত্রার ভূমিকম্পকে প্রবল ভূমিকম্প ও 7+ বেশি মাত্রা কে বিধ্বংসী ভূমিকম্প বলা হয়।
ভূমিকম্প থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়
1. ভূমিকম্প সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা ও ব্যাপকভাবে প্রচার করা।
2. ভূমিকম্পে সহ্য করার ক্ষমতা সম্পন্ন স্ট্রাকচারাল প্লান্ট অনুসরণ করে বাড়িঘর নির্মাণ করা।
3. সারাদেশের শহর সমূহে দমকল বাহিনীর গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, ক্রেন ইত্যাদি চলাচলের কথা বিবেচনা রেখে প্রয়োজনমতো প্রশস্ত রাস্তা করতে হবে।
4. বাড়ির অভ্যন্তরে বিদ্যুৎ গ্যাস সংযোগে দুটি পূর্ণ হলে তার সংস্কার করতে হবে, বাড়িতে পানি বা গ্যাসের লাইনে নমনীয় পাইপ ব্যবহার করতে হবে, বাড়িতে এসি ওয়াটার হিটার, ফ্রিজ, গ্যাসের চুলা নিরাপদ স্থানে রাখা অসম্ভব হলে দেয়াল বা মেঝের সাথে শক্তভাবে আটকিয়ে রাখা।
5. বাড়িতে প্রতিটি রুমে শক্ত টেবিল বা খাট রাখা এবং চিহ্নিত স্থানগুলো সবাইকে জানিয়ে রাখা।
6. বাড়িতে সকল সদস্যদের নিয়ে দুর্যোগ কালীন মোহড়ার আয়োজন করা।
7. ভূমিকম্পের ফলে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় সেচ্ছাসেবক দলকে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত করার পদক্ষেপ হিসেবে ভূমিকম্প ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার সমূহে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন ও তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
ভূমিকম্পের সময় করণীয়
1. ভূমিকম্প হচ্ছে টের পেলে সঙ্গে সঙ্গে ফাঁকা স্থানে অথবা উন্মুক্ত স্থানে আশ্রয় নিতে হবে।
2. ভূমিকম্পের সময় বাড়িতে থাকলে নিজেকে ও পরিবারকে বাঁচানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কম মাত্রার ভূমিকম্প হলে দ্রুত বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ এমনকি গ্যাসের চুলা ও হিটারও বন্ধ করতে হবে।
3. বাড়ির বাইরে থাকলে বড় বড় দালান কোঠা বা গাছপালা নিচে দাঁড়ানো উচিত নয়। বরং খোলা আকাশে নিচে দাঁড়িয়ে থাকলে ধ্বংসযজ্ঞ থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাওয়া যায়।
4. ভূমিকম্পের সময় লিফটের ভেতর থাকলে দ্রুত নিচে নেমে আসার চেষ্টা করতে হবে।
5. ট্রেন বা গাড়িতে ওঠার পর ভূমিকম্প শুরু হলে কোন জিনিস ধরে স্থির ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে যাতে ড্রিম বা গাড়ি হঠাৎ থেমে গেলে ছিটকে পড়া সম্ভাবনা কম থাকে।
6. ভূমিকম্পে পাহাড় ধ্বসের সম্ভাবনা থাকে তাই নিরাপদ স্থানে ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে হবে ও উপকূলীয় এলাকাতে জীবননাশের হুমকি থাকে তাই বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দ্রুত উপকূল ত্যাগ করতে হবে।
7. ভূমিকম্পের সময় সিনেমা হল সুপার মার্কেট ইস্কুল কলেজ শপিং মল ইত্যাদি স্থানে জনসমাগম বেশি থাকায় ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয় তাই ভূমিকম্পের সময় এসব স্থানে থাকলে সেখানকার কর্তৃপক্ষ ও কর্মচারী বা নিরাপত্তা কর্মীদের সাহায্য নিতে হবে।
8. একবার ভূমিকম্পের পরপরই আরেকটা ছোট ভূমিকম্প হয়ে থাকে যেটাকে বলা হয় আফটাৱ শক। তাই নিরাপদে স্থানে সম্ভবত বেশি সময় নিয়ে থাকুন।
9. ভূমিকম্পের সময় উঁচু ভবন থেকে দ্রুত নামার জন্য লিফট ব্যবহার করা যাবে না বা ভবন থেকে লাফিয়ে পড়া যাবে না।
10. মুঠো ফোনে ফায়ার সার্ভিস এবং দরকারি নম্বর সমূহ সর্তকতা হিসেবে রেখে দিন যা বিপদের সময় আপনাকে সাহায্য করবে।
11. উঁচু ভবন থেকে বের হতে না পারলে দেয়ালের পাশে অবস্থান নিয়ে অথবা শক্ত কোন বীম, টেবিল বা খাটের নিচে অবস্থান নিন।
12. টাকা, অলংকার গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সঙ্গে আনার জন্য অযথা সময়ে নষ্ট করবেন না, জীবনটাই সবচেয়ে বড় সম্পদ।কয়েক সেকেন্ডে ভয়াবহ সর্বনাশ হয়ে যেতে পারে।
13. ভূমিকম্পের সময় ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়লে দিয়াশেলাই ধরানো থেকে বিরত থাকুন, ভিতরে ধাক্কাধাক্কি থেকে বিরত থাকুন, মুখে কাপড় দিয়ে ধুলাবালি থেকে শ্বাস-প্রসাস স্বাভাবিক করার চেষ্টা করুন ।
6 Comments
Fine
ReplyDeleteGood
ReplyDeleteভালো হয়েছে
ReplyDeleteBest writing
ReplyDeleteFine
ReplyDeleteBest
ReplyDelete