Ticker

20/recent/ticker-posts

ব্যক্তিত্বেৱ বিকাশ(PERSONALITY DEVELOPMENT)


ব্যক্তিত্ব বিকাশের মাধ্যমে নিজেদের  মধ্যকার  গুণগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার ও নতুন  নতুন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা যায়।এর মাধ্যমে ব্যক্তিজীবনে এবং কর্মজীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সাহায্য করে।ব্যক্তিত্ব হচ্ছে আচার-আচরণ ও চিন্তাভাবনার একটি অনন্য মিশ্রণ। দৃঢ়ভাবে চেষ্টা করলে  এর মাধ্যমে নিজের স্বভাব,চরিত্র এবং চিন্তাভাবনার উন্নতি সাধন করা সম্ভব।

নিচের কৌশলগুলো অনুধাবন ও অনুসরণ করে আপনি আপনার ব্যক্তিত্বের উন্নতি সাধন করতে পারবেন।

 কথা বলার চেয়ে কথা শোনার আগ্রহ বৃদ্ধি করা।

কেউ  যদি আপনাকে তার কোন গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে চায় এর মানে হচ্ছে তার কাছে আপনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি,এই অনুভূতিটাকে উপলব্ধি করে আপনি হতে পারেন একজন চমৎকার শ্রোতা। সুন্দর করে কথা বলা যেমন একটি গুণ তেমনি অন্যের কথা শোনাও একটি বিশেষ দক্ষতা।আপনি যখন গুরুত্বসহকারে অন্যদের কথা শুনছেন, তখন অন্যরাও আপনার প্রতি সমান গুরুত্ব দেবে এবং যেকোনো বিষয়ে মন খুলে আপনার সাথে কথা বলতে দ্বিধাবোধ করবে না। আপনার ব্যক্তিত্বে এই বিশেষ গুণটি যুক্ত করে নিজের ব্যক্তিত্ব আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন খুব সহজেই।

ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও সময়োপযোগী মানুষের   জীবন ও কর্ম  সম্পর্কে জানা  ও সম্পৃক্ত হওয়া

মহৎ ব্যক্তিদের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে পড়াশুনা ও অনুধাবন করা। একেকজন মহৎ ব্যক্তি তাদের জীবনে যেভাবে নিজেকে তৈরি করেছেন সেভাবে নিজেকে তৈরি করা। এর ফলে  তাদের জীবনের ভালো ভালো ব্যক্তিত্বসম্পন্ন গুণাবলী গুলো আপনার মধ্যে ধীরে ধীরে প্রকাশিত হবে।

নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানা ও জ্ঞানের  পরিধি বৃদ্ধি করা।

 নতুন নতুন বিষয় জানার আগ্রহ বাড়াতে হবে। সাথে সাথে নিয়মিত জ্ঞানচর্চা চালিয়ে গেলে জ্ঞানের পরিধি বাড়াবে। এছাড়াও অন্যদের কাছে  আপনি আরো আকর্ষনীয় হয়ে উঠবেন কারণ তারা তখন আপনার কাছ থেকে নতুন কিছু জানার সুযোগ পাবে। এর মাধ্যমে যেমন আপনার আত্মবিশ্বাস কয়েকগুণে বেড়ে যাবে, তেমনি নিজের আগ্রহের বিষয়ে অন্যদের সাথে কথা বলার সুযোগটাও পেয়ে যাবেন। এ ক্ষেত্রে সৃজনশীলতাকে কাজে লাগাতে পারেন এবং নিজের চিন্তাভাবনাকে চার দেয়ালের মাঝে আটকে না রেখে আরো বৈচিত্রময় করে তুলতে পারেন। অভিজ্ঞতা বাড়াতে বিভিন্ন সৃষ্টিশীল সংগঠন অথবা প্রজেক্টের সাথে যুক্ত হতে  পারেন।অন্যদের আগ্রহের কেন্দ্র সম্পর্কে জানতে আলাপ-আলোচনার কোনো বিকল্প নেই। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারবেন, তেমনি অন্যদের কাছ থেকেও শিখতেও পারবেন অনেককিছু। আর এতে আপনার আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যাবে বহুগুণে। আর ব্যক্তিত্ব হবে সমৃদ্ধ।

নতুন নতুন মানুষের সাথে  সম্পর্ক বৃদ্ধি করুন

সবসময় নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করুন। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু মানুষের সাথে চলাফেরা করলে আপনার জানার পরিধি কম হবে। ডিজিটাল এই যুগে নেটওয়ার্কিং এর গুরুত্ব অনেক বেশি। যতো বেশি মানুষের সাথে পরিচিত হতে পারবেন, নেটওয়ার্কিং বাড়ানো ততোই সহজ হয়ে যাবে। নতুন মানুষদের সাথে পরিচিত হলে তাঁদের সংস্কৃতি, ধারণা, মতামত ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং তা আপনার মন-মানসিকতার বিকাশে সাহায্য করবে। এটি আপনার মনের দিগন্তকে আরো বিস্তৃত করবে, ব্যক্তিত্ব হবে উন্নত।

নেতৃত্বদানের দক্ষতা ও ক্ষমতা কে বাড়িয়ে তুলুন

সবার সাথে যোগাযোগ রাখা, দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা, পজিটিভ চিন্তা-ভাবনা করা, বিশ্বস্ততা অর্জন করা, সৃজনশীলতা বৃদ্ধি ইত্যাদির মাধ্যমে নেতৃত্বদানের ক্ষমতা বাড়ানো যায়।চাকুরীজীবিরা এই দক্ষতাটি বাড়ানোর জন্য সবসময়ই উন্মুখ হয়ে থাকেন, কারণ এর মাধ্যমে অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা, অনুপ্রেরণা দেওয়া সহজ হয়।শুধুমাত্র চাকরিক্ষেত্রেই এর প্রয়োজনীয়তা আছে- তা নয়। পরিবারের যেকোনো ডিসিশন নেয়ার জন্যেও নেতৃত্বদানের দক্ষতা গুলো ডেভেলপ করা প্রয়োজন। এতে করে অন্যরা আপনার কথা শুনবে, মানবে এবং আপনাকে শ্রদ্ধা করবে। আপনার ব্যক্তিত্ব হবে সমৃদ্ধ।

নিজেকে উপস্থাপনার কৌশল সঠিকভাবে আয়ত্ত  করুন।

উপস্থাপনার কৌশলগুলোকে আয়ত্ব করার কোনো জুড়ি নেই! যেকোনো বিষয় সাবলীলভাবে উপস্থাপনা করলে আপনার প্রতি সবার আকর্ষণ অনেকাংশেই বেড়ে যাবে। আপনার বাচনভঙ্গি এবং সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে হয়ে যেতে পারেন দক্ষ একজন উপস্থাপক। আপনার বাচনভঙ্গি আপনার ব্যক্তিত্ব গঠনে সাহায্য করে।

অন্যের কাজকর্ম ,সততা ও আদর্শকে সম্মান করা।

সম্মান এবং প্রশংসা অর্জন করা যায় ঠিক তখনি, যখন আপনি নিজে অন্যকে সম্মান দেবেন এবং প্রশংসা করবেন। কাউকে কোনো প্রতিশ্রুতি দিলে সেটা পূর্ণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  মনে রাখবেন, সততা এবং সম্মান থাকলে আপনার ব্যক্তিত্ব অন্যদের চোখে  সহজেই ফুটে উঠবে। কাজেই অন্যদের সম্মান করুন যাতে করে আপনি নিজে একটি সম্মানজনক জীবন লাভ করতে পারেন।

নিজেকে সৎ আদর্শ ও  নীতিবান হিসেবে তৈরি করা

নিজেকে সৎ আদর্শ নীতিবান হিসেবে তৈরি করতে পারলে অচিরেই আপনার গুণাবলী গুলো অন্যের কাছে ফুটে উঠবে এবং ধীরে ধীরে আপনি হয়ে উঠবেন একজন অনুকরণীয়, অনুসরণীয়  আদর্শ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ।নিজের ভেতরের গুণাবলী যেমন-  নীতি নৈতিকতা,আদর্শ,সততা, সরলতা, কর্তব্য নিষ্ঠ,পরোপকারী, মানবিকতা ও মানবসেবা  ইত্যাদি এই গুণগুলো নিজের জীবনে জাগিয়ে তুলুন।এই গুলো যে শুধুমাত্র পেশাগত জীবনে প্রয়োজনীয়-তা নয়, ব্যক্তিগত জীবনে এর মূল্য অপরিসীম।

Post a Comment

5 Comments

Ad Code

Responsive Advertisement