Ticker

20/recent/ticker-posts

হতাশা কি ?এর কারণ ও প্রতিকার(What is depression? Its causes and remedies)



হতাশা হলো এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা।চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্যক্তির স্বাভাবিক অনুভূতির অবনতিকেই হতাশা বলে।হতাশা ব্যক্তির উপর নির্ভর করে বিভিন্ন মাত্রার হতে পারে।হতাশা আর মানসিক ভারসাম্যহীনতা এক বিষয় নয়।মানসিক ভারসাম্যহীনতা মানুষের এক ধরনের রোগ,যেখানে মানুষের মন মানসিকতা চিন্তা চেতনা সম্পূর্ণরূপে লোক পায়।অন্যদিকে হতাশার কারণে তিনটা চেতনা কিছুটা লোভ পেলেও লোক পেলেও অনেকটাই স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে।আমরা ব্যবহারিক জীবনে কমবেশি সবাই হতাশায় ভুগে থাকি।হতাশার কারণে ব্যক্তি নিজেকে আস্তে আস্তে অর্থহীন ভাবতে শুরু করে এবং আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে।তখন অনেক সময় বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াটা কে সহজ সমাধান হিসেবে মনে করে ফেলে।

হতাশাকে এক ধরনের আবেগ জনিত মানসিক সমস্যা বলা হয়।হতাশা যখন দীর্ঘ সময় ব্যাপী ধরে থাকে তখন তার জীবনযাত্রা কর্মতৎপরতা ও স্বাভাবিক সম্পর্ক বাধাগ্রস্ত হয়।হতাশা মস্তিষ্কের সেরোটোনিন জাতীয় রাসায়নিক পদার্থের গুণগত ও পরিমাণগত তারতম্য ঘটায়।যেকোন মানুষ যেকোনো সময়ই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে।

বিভিন্ন কারণে মানুষ হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়তে পারে।হতাশাগ্রস্ত হওয়ার কারণগুলো আলোচনা করা হলো।

1.পারিবারিক কোলাহল ও সম্পর্কের সমস্যার কারণে হতাশা আসতে পারে।

2.দারিদ্রতা বা বেকারত্বের কারণে হতাশা আসতে পারে।

3.শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে হতাশা আসতে পারে।

4.বয়স্ক মানুষ একা থাকলে এবং অবহেলিত হলে হতাশা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।

5.কিছু কিছু ওষুধ সেবনের কারণে হতাশা তৈরি হতে পারে।

6.প্রিয়জনের মৃত্যু,অথবা প্রিয়জনের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার কারণে হতাশা আসে।

7.পুরুষের তুলনায় মহিলাদের প্রায় দ্বিগুণ হতাশ হওয়া সম্ভাবনা থাকে।মহিলাদের বিভিন্ন সময়ে হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে হতাশাবৃত্তিতে সহায়তা করে।

8.গুরুতর অসুস্থতা এবং জেনেটিক রোগ ও হতাশা সৃষ্টি করে।

9.মহিলারা গর্ভকালীন এবং গর্ভ পরবর্তী সময়ে হতাশা ঝুঁকিতে বেশি থাকে।

10.অতিরিক্ত নেশা ও মাদক সেবনের ফলে আস্তে আস্তে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরে।

হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের বিভিন্ন লক্ষণ চোখে পড়ে,যা আলোচনা করা হলো।

1.দিনের বেশিরভাগ সময় মন খারাপ করে থাকা এবং কোন কিছু কাজ করতে ভালো না লাগে।

2.মেজাজ খিটখিটে থাকা ও হঠাৎ করে রেগে যাওয়া।

3.মনোযোগ কমে যাওয়া ও ক্লান্তি বোধ করা।

4.বেশি ঘুমানো অথবা ঘুম না হওয়া।

5.খিদে না থাকা অথবা খেতে ইচ্ছে না করা অথবা বেশি বেশি খাবার গ্রহণ করা।

5.নিজের কোন সামান্য ভুলেও নিজের প্রতি ঘৃনা প্রকাশ করা।

6.ক্লান্ত অলস ও শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়া।

7.মাথাব্যথা,শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা পেটে ব্যাথা ইত্যাদি শারীরিক অসুস্থতা বৃদ্ধি হওয়া।

8.মনোযোগ ও যৌন স্পৃহা কমে যাওয়া।

9.অসংলগ্ন আচরণ ও মাদকাসক্ত হয়ে থাকা।

10.নিজেকে অপরাধী ভাবা এবং আত্মহত্যার চিন্তা ও চেষ্টা করা।

হতাশা থেকে মুক্তির উপায় আলোচনা করা হলো।

1.আত্মীয় স্বজনের পরিবারের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা।

2.খারাপ ও দুষ্টু প্রকৃতির লোক থেকে দূরে থাকা।

3.প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করা ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা।

4.নেশা ও মাদকদ্রব্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকা।

5.সোশ্যাল মিডিয়ায় কম সময় দেয়া এবং গুজবে কান না দেয়া।

6.মানসিক চাপ কমানো এবং পর্যাপ্ত ঘুমানো।

7.সব সময় ইতিবাচক চিন্তা করা ও ইতিবাচক মানুষের সাথে সময় কাটানো।

8.প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের সেবা নেওয়া ও থেরাপি নেওয়া।

9.পরিবার ও পাড়া-প্রতিবেশীদের ভালো কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়।

10.অবসর সময়ে পরিবারের সাথে নতুন নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া।

শুধু চিকিৎসা দ্বারাই হতাশাকে জয় করা সম্ভব নয়।এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া দৃঢ় মনোবল প্রচেষ্টা থাকলে আস্তে আস্তে নিজ থেকেই হতাশা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

Post a Comment

1 Comments

Ad Code

Responsive Advertisement