Ticker

20/recent/ticker-posts

রুচি ও মূল্যবোধের অবক্ষয় ও প্রতিকার


 মানুষের জীবনযাপনের প্রক্রিয়া বিভিন্ন বস্তুগত অবস্তুগত বিষয়চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে।মানুষের রুচিশীলতা ও মূল্যবোধ এদের মধ্যে অন্যতম মাধ্যম হিসেবে রয়েছে।সমাজে কোন বিষয়টি ভালো বা ভালো না,উচিত বা উচিত নয়,ঠিক বা ঠিক নয় ইত্যাদি বিষয় যে ধারা দিয়ে থাকে তাকে রুচিশীলতা অথবা মূল্যবোধ বলে।বর্তমান সমাজে রুচি ও মূল্যবোধের যে চরম অবক্ষয় চলছে তার বলার অপেক্ষায় রাখে না।এই অবক্ষয়ের কারণে জনজীবন আজ অতিষ্ঠ।জীবনের প্রতিটি জায়গায় যেমন-অফিস আদালত,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,রাস্তাঘাট,হাট বাজার,যানবাহন,সামাজিক বা ধর্মীয় কোন অনুষ্ঠান সর্বত্রই এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।বর্তমান সমাজ ও ব্যক্তি জীবনে এই অবক্ষয় শীর্ষ পর্যায় রয়েছে।

সমাজে মানুষ যখন সামাজিক মূল্যবোধ ও রুচিশীলতাকে উপেক্ষা করে অন্য কোন ভাললাগা ও পছন্দ কে গুরুত্ব দেয় তখন এই অবক্ষয় ঘটে।

রুচি ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণ গুলো আলোচনা করা হলো।

1.দারিদ্রতার কষাঘাতে জীবনের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে এবং পরিবারের ভরণপোষণ যোগান দিতে গিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্র বিরোধী কার্যক্রমের যুক্ত হয় যার ফলে অবক্ষয় তৈরি হয়।

2.সমাজের চারদিকে  আজ অন্যায় অত্যাচার,মিথ্যাচার,অপকর্ম ও অসততা,নিরীহ মানুষের উপর জুলুম,সত্যের নামে প্রতারণা,সমাজ সেবার নামে স্বেচ্ছাচারিত চলছে,সমাজের প্রতিটি স্তরে আদর্শ ও মূল্যবোধের অভাবের কারণে এই অবক্ষয় ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছেষ

3.সংস্কৃতি একটা দেশের নিজস্ব পরিচিতি বহন করে।কিন্তু সংস্কৃতি যখন অপসংস্কৃতির রূপ নেয় তখন  সমাজ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।অপসংস্কৃতির মধ্যে হল-কুরুচিপূর্ণ নাটক,সিনেমা,বিদেশী ও দেশি নোংরা পোশাক পরিচ্ছদ,অশ্লীল চরিত্র,অশ্লীল গান ও বিজ্ঞাপন ইত্যাদি দিনে দিনে অপেক্ষার দিক নিয়ে যায়।

4.মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় অবদান রাখে তার পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থা।একটি শিশু পারিপার্শ্বিক ও পরিবারে যা দেখে বড় হয়ে তাই শিখে।আমাদের পরিবার ও সামাজিক ব্যবস্থা নানা কারণে জর্জরিত হয়ে আছে যেমন-রাজনৈতিক- অস্থিতিশীলতা,দুর্নীতি,স্বজন প্রীতি,কালোবাজারি,দারিদ্রতা,ঝগড়াও মারামারি,অশ্লীল বকাঝকা ইত্যাদি অন্যায় এবং অত্যাচার দেখে মানুষের অবক্ষয় তৈরি হয়।

5.বর্তমানে মাদকাসক্তি ও সন্ত্রাস শব্দটি সমর্থক রূপে বিবেচিত হয়।মাদক সেবনের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে ছিনতাই,রাহাজানি,ডাকাতি,চাদাবাজী ইত্যাদি আশ্রয় নিতে হয় যার জন্য সমাজের অবক্ষয় তৈরি হয়।

6.মানুষ অনুকরণপ্রিয়।তাই সমাজের চারপাশে যে অশ্লীলতা,ধর্ষণ,দুর্নীতি,স্বজন প্রীতি,মাদক সেবন,বিদেশি অপসংস্কৃতি ইত্যাদি দেখে মানুষ তা করার জন্য ঝুঁকে পারে ও অবক্ষয়ের তৈরি হয়।

7.অনেক সময় ভৌগোলিক কারণে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে,আদ্যাভ্যাস,বংশগত কারণ,ও ঋতুর প্রভাবে মানুষের মধ্যে বিরাট প্রভাব ফেলে এ জন্য মানুষের সামাজিক মূল্যবোধ ও রুচির অবক্ষয় হয়।

রুচিও মূল্যবোধের অবক্ষয় কিভাবে রোধ করা যায় তা আলোচনা করা হলো।

1.দারিদ্র বিমোচন এবং বেকারত্ব কমানোর ভিতর দিয়ে কর্মসংস্থান বাড়ানো।

2.রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা,দুর্নীতি,স্বজন প্রীতিইত্যাদি বন্ধ করা

3.অপসংস্কৃতি এবং বিদেশি সংস্কৃতি রোধ করা।

4.কর্ম ও ব্যক্তিজীবনে সততা, ন্যায়পরনয়তা,নৈতিকতা, মানবিকতা,পরম সহিষ্ণুতার চর্চা করতে হবে।

5.প্রতিটি মানুষই কোন না কোন পরিবারে জন্মগ্রহণ করে।তাই পরিবারই পারে প্রাথমিক পর্যায়ে তারে উপযুক্ত রুচি ও মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে।

6.ইন্টারনেট ও মোবাইলে খারাপ দিকগুলো সম্পর্কে জানা এবং এ থেকে বিরত রাখা সাথে সাথে শক্তিশালী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলাযার মধ্য দিয়ে সঠিক রুচিশীলতা এবং মূল্যবোধের প্রকাশ পাবে।

Post a Comment

3 Comments

Ad Code

Responsive Advertisement