Ticker

20/recent/ticker-posts

বাউল দর্শন ও সংগীত


কারো কারো  মতে  ব্যাকুল শব্দ থেকে বাউল শব্দটি এসেছে।যে মানুষ সহজ সাধনার মধ্য দিয়ে মানুষরূপী ঈশ্বরকে অন্তরে অনুভব করার জন্য ব্যাকুল,সেই ব্যক্তি হলো বাউল। বাউলের ভিত্তি হল  বহুবিধি ধর্ম দর্শনের সৃষ্টি একটি  রূপ। এই দর্শন কে মেনে নিয়ে স্বতন্ত্র জীবনধারণের পদ বেঁচে নেয় তখনই তিনি বাউল হতে পারেন। এই  দর্শন যখন বিশেষ সুরে সুরে গানে প্রকাশিত হয় তখন তাকে বাউল সংগীত বলে।বাউল সংগীত  লোকায়ত সংগীতের একটি  অনন্য ধারা। আবহমান বাংলার প্রকৃতি মাটি ও মানুষের জীবন জিজ্ঞাসা নিয়ে গড়ে উঠেছে বাউল সংগীত। বাউল সংগীত বাউল সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক গান। এ সঙ্গীতে ফুটে উঠেছে মানবতা ও সাম্যের গান। এটি লোকসঙ্গীতের এমন একটি ধারা যা হিন্দু শাস্ত্রের ভক্তিবাদ ও সুফিবাদ দ্বারা প্রভাবিত। স্রষ্টার সাথে সৃষ্টির সম্পর্কের ভাবনা আর ভিন্নধর্মী জীবন দর্শনের মধ্যেই বাউলদের বিশেষত্ব নিহিত। এই দর্শনে ধর্ম-বর্ণ দেবতার গণ্ডিকে পেরিয়ে স্রষ্টাকে তার আত্মার অংশ হিসেবে বিশ্বাস করে।এই দর্শনের মধ্য দিয়ে তারা আত্মার মুক্তির সাধনা করে। বাউল সংগীতের স্রষ্টা লালন শাহ। বাউল সংগীতের প্রধান বাদ্যযন্ত্র একতারা। নাচ গান ও বাদ্য এই তিনটি সমন্বয়ে বাউল সংগীত স্বতন্ত্র আবেগ ও সৌন্দর্য সৃষ্টি করে। বাউল সংগীত আজকাল বিশ্ব দরবারে প্রবেশ করেছে।  ভিন্ন ভাষাভাসীর মানুষ আজকাল বাউল সংগীত নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করছে।  অনেক মানুষ আজকাল বাউল দর্শন নিয়ে গবেষণা করছে।এই বাউল সংগীতের অপরিসীম সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের গুরুত্ব বিবেচনা করে ইউনেস্কো ২০০৫ সালে Masterpiece  of the oral and intangible heritage of humanity হিসেবে ঘোষণা করে। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে ইউনেস্কো বাউল সংগীত কে  Intangible cultural heritage of humanity অন্তর্ভুক্ত করে।

ফকির লালন শাহের একটি উক্তি- "আমার আপন খবর আপনার হয় না একবার আপনারে চিনলে পারে অচেনারে যায় চেনা"

Post a Comment

2 Comments

Ad Code

Responsive Advertisement